দেশজুড়ে

দেশের বড় ‘রাজাবাবু’, ২৫ লাখে বিক্রির আশা

দেশের বড় ‘রাজাবাবু’, ২৫ লাখে বিক্রির আশা

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার কৃষক ইনছান আলীর পোষা গরু ‘রাজাবাবু’। দেখতে বলা যায় কালা পাহাড়। তবুও রাজাবাবু হিসেবেই পরিচিত গরুটি। এ বছরে দেশের সর্ববৃহৎ কোরবানির পশু বলেই ধরা হচ্ছে রাজাবাবুকে।
গরুটির মালিক মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালি গ্রামের কৃষক ইনছান আলী। তিনি আদর করেই গরুটির নাম দিয়েছেন রাজাবাবু।

১০ ফুট লম্বা, ৬ ফুট উচ্চতার এই রাজাবাবুর ওজন প্রায় ৫০ মণ। ২ বছর ১০ মাস বয়সী রাজাবাবুকে সন্তানের মতোই লালন-পালন করেছেন ইনছান আলী ও তার পরিবারের লোকজন। বৃহদাকার এই ষাঁড়ের জন্য প্রতিদিনের বাজেট প্রায় এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা। এর খাদ্য তালিকায় আছে কলা, ভুট্টা, ছোলা, গম, ভাত, তাজা ঘাসসহ বিভিন্ন দামি খাবার। শুধু আদর যত্নই নয়, রাজাবাবুর স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখেন ইনছান আলী। রাজাবাবুর নিরাপত্তার স্বার্থে রাতে বাড়ির সবাই সতর্ক থাকেন।

ইনছান আলী জানান, এই হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটির বয়স যখন ৪ মাস ছিল তখন তিনি ৮৫ হাজার টাকায় পাশের গ্রাম থেকে কিনে এনেছিলেন। এরপর থেকে আদর যত্নে লালন-পালন করেছেন।

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রাজাবাবুর মালিক এর দাম হাঁকাচ্ছেন ২৫ লাখ টাকা। এটি আকার-আকৃতি ও ওজনের দিক থেকে দেশের সবচাইতে বড় বলে দাবি করছেন এলাকাবাসী। রাজাবাবুকে দেখতে প্রতিদিনই ঐ মালিকের বাড়িতে ভিড় করেন এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন বয়সী লোকজন।

পাশের জেলা চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন এলাকার গরু ব্যবসায়ীরা গরুটি দেখতে আসছেন। দরদামও করছেন তারা। এরই মধ্যে গরুটির দাম ১২ থেকে ১৩ লাখ টাকায় উঠেছে বলে জানান ইনছান। রাজাববুকে বাড়ি থেকেই ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে চান তিনি।

ইনছান আলীর স্ত্রী শাহিনা আক্তার বলেন, বিশাল আকারের এই গরুটিকে আমি নিজের সন্তানের মতোই ভালোবাসি। দিনে ২ বার গোসল করাতে হয়। গোয়াল ঘরটিও দুই বেলা পরিষ্কার করতে হয়। প্রায় সারাদিনই যত্ন করতে হয় গরুটির। রাজাবাবুর বিক্রির কথা আসলেই বুকটা ফেটে যায়। চোখের পানি ঠেকাতে পারিনা।

ইনছান আলীর এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ে সেজুতি সবনম বলেন, রাজাবাবুর মানুষের মতোই অনুভূতি। আমার কাছে মনে হয়েছে আমি যেমন আমার বাবা-মাকে বুঝতে পারি, রাজাবাবুও তাদেরকে সেভাবে বুঝতে পারে। গরুটি খুব শান্ত স্বভাবের। রাজাবাবু যেদিন বিক্রি হয়ে যাবে সেদিন হয়তো খুব কষ্ট হবে আমাদের পরিবারের সবার।

মেহেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইদুর রহমান বলেন, গরুটি দেখতে গিয়েছিলাম। ৪ দাঁতের রাজাবাবুর আকার ও ওজন পরিমাপ করে দেখা যায়, এর উচ্চতা ৬ ফুট, লম্বা ১০ ফুট, বুকের পরিমাপ ১০ ফুট, মুখ চওড়া সাড়ে ৩ ফুট, গলার বেড় ৬ ফুট, শিং ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি লম্বা এবং ওজন প্রায় ৫০ মণ। আমার জানা মতে বর্তমানে আকার ও ওজনে এটিই দেশের সবচেয়ে বড় গরু।

Related Articles

Back to top button