দ্বাদশ নির্বাচনের আসন ভাগাভাগির দেনদরবারে ২০ দল
দ্বাদশ নির্বাচনের আসন ভাগাভাগির দেনদরবারে ২০ দল

নির্বাচন ব্যবস্থা থেকে দূরে সরতে সরতে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলের স্থান হারানো বিএনপি এখন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে। আসন্ন জাতীয় দ্বাদশ নির্বাচনকে ঘিরে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে আসন ভাগাভাগির দেনদরবার সামনে এসেছে।
সূত্র জানায়, গত এক দশকের বেশি সময় বারবার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েও ব্যর্থ দলটি। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে গোপনে নানা ছক কষতে শুরু করেছে বিএনপি। এরই মধ্যে ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে গোপন ও প্রকাশ্যে সংলাপ শুরু করেছেন দলটির নেতারা। সংলাপে বিএনপির সঙ্গে নানান করণীয় ও পরিকল্পনার পাশাপাশি সংসদীয় আসন বণ্টন, মন্ত্রণালয় নিয়ে রীতিমতো দরকষাকষি করছে শরিক দলগুলো।
জানা গেছে, সম্প্রতি স্থায়ী কমিটির সভায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপরেখা প্রণয়নে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। সেই অনুযায়ী নাগরিক ঐক্যের তোপখানা রোডের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সংলাপ শুরু করে বিএনপি। এরপর বাংলাদেশ লেবার পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ভাসানীর সঙ্গে সংলাপে বসে বিএনপি।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘদিন বিএনপির শরিক হিসেবে আছি। বিএনপির সঙ্গে আমাদের সংলাপ হয়েছে। সংলাপে ন্যূনতম দুটি আসন ও একটি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট থেকে আসন পায়নি ন্যাপ ভাসানী। একইভাবে আসন পায়নি বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এলডিপি গত নির্বাচনে ১০ আসন চেয়েছিল। কিন্তু পেয়েছিল পাঁচটি। নাগরিক ঐক্য পেয়েছিল চারটি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি তিনটি চেয়ে পেয়েছিল একটি, কল্যাণ পার্টি পেয়েছিল দু’টি, কাজী জাফরের জাতীয় পার্টি পেয়েছিল একটি ও এনপিপি পেয়েছিল একটি আসন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নিজেদের ঠকাতে চান না ২০ দলীয় জোটের নেতারা।
জোটের একাধিক নেতা বলেন, আমাদের দলগুলোতে অন্তত কয়েকজন নেতা থাকেন যারা এমপি ও মন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। কিন্তু গতবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জোটের কারণে যথাযথ মূল্যায়ন পাওয়া যায়নি। এবার সংলাপে গতবারের অবহেলার ব্যাপারটি উঠে এসেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনের সঠিক মূল্যায়ন পেতে কথা হয়েছে। যদি বিএনপি আসন বণ্টন সুষ্ঠুভাবে করে তবে তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাব। আমাদের দলের জনপ্রিয়তা না থাকলেও নেতাদের যথেষ্ট মূল্যায়ন রয়েছে যা বিএনপির বিবেচনা করা উচিত।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, গত নির্বাচনে তিনটি আসন চেয়েছিলাম। পেয়েছি একটি। এবার আসন ভাগাভাগির বিষয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। তবে আমরা আমাদের নতুন দাবি উত্থাপন করবো।
ন্যাশনাল পিপলস পার্টি এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে জোটে রয়েছি। বিএনপির সঙ্গে সংলাপও করেছি। সংলাপে আন্দোলন, নির্বাচন, সরকার গঠনের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।